সিকিম ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি রাজ্য এবং উল্লেখযোগ্য পর্যটন কেন্দ্র। সিকিমের রাজধানী শহর গ্যাংটক। আয়তনে ভারতের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম প্রদেশ । এর উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চীনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল তিব্বত, পূর্বে ভূটান, পশ্চিমে নেপাল এবং দক্ষিণে ভারতের অপর একটি রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ। সিকিম বাংলাদেশের নিকটবর্তী ভারতের শিলিগুড়ি করিডোরের কাছাকাছি অবস্থিত। সিকিম ভারতীয় রাজ্যগুলির মধ্যে সর্বাপেক্ষা কম জনবহুল এবং আয়তনে দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম। পূর্ব হিমালয় অঞ্চলের একটি অংশ সিকিম, আল্পাইন এবং উপক্রান্তীয় জলবায়ু সহ এর জীব বৈচিত্র্যের জন্য উল্লেখযোগ্য।
প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের একখন্ড সিকিম। হিমালয়ান বিস্তৃত ভূমির ছোট্ট এই এলাকাটি ঘিরে রয়েছে অনেক কৌতুহল… যাই হোক,,, সিকিমের সৌন্দর্য সত্যিই অসাধারণ… গাজীপুর থেকে বিকাল ৫ টায় পঞ্চগড়ের বাসে করে রওনা করলাম সাথে সখের সাইকেলখানা। ভোড়ে নামিয়ে দিলো, পঞ্চগড়। হালকা কিছু নাশতা করেই রাইড শুরু করলাম বাংলাবান্ধার উদ্দেশ্যে। সকাল ৯ টার দিকে বাংলাবান্ধা পৌছালাম।
ইমিগ্রেশনে গিয়ে দেখি বিশাল লাইন, মাথা নষ্ট এই লাইনে থাকলেতো আমার যাওয়া শেষ। ভালোকরে চেয়ে দেখি ইমিগ্রেশন পুলিশ যাকে আমি চিনি, কারন এই পোর্ট দিয়ে আগেও সাইকেলে গিয়েছি। লাইনের পাশ দিয়ে উনার কাছে যেতেই বলল আরে কাজী সাইকেলে এসেছো নাকি, ওপার যাবে নাকি?? আমি : জি স্যার, সাইকেলে ঘুরতে যাবো,, উনি আর কোন কিছু না শুনেই বলল তোমার পাসপোর্ট দাও তোমাকে আগে ছেড়ে দেই,, আমিতো মহা খুশি.. চলে এলাম ০ পয়েন্টে।

বর্ডারে চেকিং শেষ করে ভারতে প্রবেশ, বি এস এফ চেকিং, সাইকেল চেকিং,, ইমিগ্রেশনে গেলাম ওখানের কাস্টমস অফিসার আমাকে দেখে বলে কিরে আবার সাইকেলে এলি নাকি? জি স্যার,, উনি বললেন তো কোথায় এবার??? বললাম সিকিম, উনি: দে পাসপোর্ট দে,, ব্যাস ১০ মিনিটে কাজ শেষ। এবার টাকা পরিবর্তন করলাম। এদিকে ইমিগ্রেশন গেটের বাইরে শিলিগুড়ির এক বন্ধু পূজা আমার জন্য অপেক্ষা করছিলো। পূজা পশ্চিমবঙ্গ পুলিশে চাকরী করে আবার খুব অডভেঞ্চার প্রিয় এবং সাইক্লিস্ট। আমরা দুজন গল্প করতে করতে কিছুদূর পর পৌছে গেলাম ফুলবাড়ী বাজারে। ফুলবাড়ী বাজারের জনপ্রিয় একটি মিষ্টির দোকান আছে পূজা আমাকে সেখানে নিয়ে গেলো আর বিভিন্ন রকমের অনেকগুলো মিষ্টি নিলো। মিষ্টি আমার খুব প্রিয় , তাই ইচ্ছেমত খেয়ে নিলাম।
পূজাকে বিদায় জানিয়ে আমি রওনা করলাম শিলিগুড়ির উদ্দেশ্যে। সিকিম যাবার মোড়ের কাছে একটা এ রেসটুরেন্টে গেলাম দুপুরের খাবারের জন্য। রুইমাছ, সবজি, আলুভাজী ও ডাল ছিল খাবারের তালিকায়। খাবার শেষে শিলিগুড়ি থেকে আস্তে আস্তে পাহাড়ের দিকে যাচ্ছি। দুপাশে ঘন জঙ্গল আর আর্মিদের ট্রেনিং সেন্টার, কিছু দুর যেতে পাহাড়ের দেখা। একপাশে নদী অপরপাশে পাহাড়, প্রকৃতি নিদারুন সৌন্দর্য যেন মন ভরিয়ে দিলো। পাহাড়ী রাস্তার ধারে পাহাড়ীরা চমৎকার তাজা কমলা বিক্রি করছে। দামে কম পেয়ে নিলাম অনেকগুলো, রাস্তার পাশের নদী আর পানিগুলো নীল, কি দারুন দেখতে। দুপুরে একটা হোটেলে ৮০/- রূপিতে মাংশ ভাত খেয়ে নিলাম।
সন্ধার সাথে সাথেই পৌছালাম তিস্তা বাজারে। সেখানে এক বন্ধুর আত্মীয়ের বাড়ি, জঙ্গলের ভেতর দিয়ে ১ কিলোর মতন যাওয়ার পর বাড়ি পৌছালাম। পাহাড়ী ছিমছাম ছোট্ট বাড়িটি টিন ও কাঠ দিয়ে তৈরি। রাতের খাবারটা ছিলো অসাধারণ। রুটি, সবজি ও মোমো। ভরপুর খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পরলাম। পরেরদিন গন্তব্য – গ্যাংটক।
বি:দ্র:
পরিবর্তনটা শুরু হোক আমাদের নিজেদের থেকে, আমাদের ঘর থেকে। আমাদের ঘরকে আমরা ঠিক যেভাবে গুছিয়ে রাখি – আমরা চাইলে আমাদের পাড়া, মহল্লা, দেশ তথা পুরো পৃথিবীকে গুছিয়ে রাখতে পারি। শুধু প্রয়োজন সচেতনতা। ময়লা আবর্জনা যেভানে সেখানে না ফেলে, নির্দিষ্ট স্থানে ফেলবো। অপচনশীল যেকোন আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ/প্যাকেট, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক , প্লাস্টিক বোতল এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নির্দিষ্ট স্থানে ফেলবো অথবা নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করবো। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এটাকে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্বও আমাদের। ভ্রমনে গিয়ে পরিবেশের যেন কোন ক্ষতি না হয় সেই দিক খেয়াল রাখা আমাদের প্রত্যেকেরই দায়িত্ব। নিজেরা নিজেদের জায়গা থেকে পরিবেশ রক্ষার কাজ করলে, প্রথিবী আরো সুন্দর ও সবুজে পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে।