মানসিক প্রশান্তি লুকিয়ে রয়েছে আপনার মনের মধ্যেই । । আপনার মনোজগত এখন সম্পূর্নরূপে অশান্তি-উৎপাদক ভাইরাসে আক্রান্ত, অনাকাঙ্খিত এইসব ভাইরাসের দখলে এখন আপনার মানসিক এলাকাগুলো। এগুলো নিজেই তৈরি করেছেন। জেনে না-জেনে, বুঝে না-বুঝে কখনো কোনো ভাবে তাই করেছেন। ভুল সফটওয়ার ঢুকিয়ে দিয়েছেন। এখন তা ক্লিন করা বলা ভাইরাসমুক্ত করার দায়িত্ব আপনার নিজেরই।
কোনো প্রচলিত মোটিভেশনাল স্পীচ, পরামর্শ, উদ্ধৃতি কাজে আসবে না। না, মেডিটেশন বা প্রার্থনা এসবেও না। এসবে আপনার সমস্যার সমাধান হবে না তাই। যেমন ধরুন, আপনার স্ত্রী/স্বামী অত্যন্ত খিটখিটে, ঝগড়াটে, নেগেটিভ মাইন্ডেড। তাকে সহ্য করে আসছেন, মানিয়ে নিয়ে মান বাঁচিয়ে চলেছেন দীর্ঘকাল—চলতে হয়, সমাজ-সংসারের চাপে। কিন্তু দীর্ঘদিনের এই মানিয়ে নিয়ে চলার ফলে, অবদমনের কারণে বা দীর্ঘমেয়াদি স্ট্রেসে আপনার মস্তিষ্কের স্বাভাবিক ডেভেলপমেন্ট বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
যেখানে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়—মানসিক বা শারীরিক যে কোনো ক্ষেত্রে, সেখানেই সমস্যা, ব্যাধি, অশান্তি থাকবেই।
প্রশান্তি নেই, তার মানে অশান্তি, অস্থিরতা, উদ্বেগ মনের মধ্যে। তাই এর উৎস অনুসন্ধান করতে হবে। মনের এই অবস্থার উৎস হতে পারে বিভিন্ন মাত্রার মানসিক চাপ। যেমন, কোনো ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে ঝগড়া, কোনো দুঃসংবাদ ইত্যাদি স্বল্পস্থায়ী। কিন্তু দীর্ঘকালীন চাপ, যেমন, ব্রেকআপ, ডিভোর্স, রোগব্যাধি, বেকারত্ব বা দারিদ্র। অথবা জীবনের ব্যর্থতা নিয়ে নিজের ওপর রাগ কিংবা অন্যকে দোষারোপ করে অসহিষ্ণু মন। এমন অসংখ্য কারণ জীবনের ময়দানে ছড়ানো থাকে। যার মধ্যে জীবন জড়িয়ে যায়, জড়িয়ে যেতে হয়, আবার তা অতিক্রম করতে হয়। এটাই জীবনের অমোঘ বৈশিষ্ট্য।
বিপত্তি বাধে তখন, যখন আমরা এসব সমস্যা মোকাবিলা করার সাহস পাই না, ফাইট করতে চাই না, ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দেই। অথবা কেউ সাহায্য করবে ভেবে চেয়ে থাকি অথবা সুদিনের আশায় বসে থাকি। আর ধীরে ধীরে দিনে দিনে যখন বুঝতে পারি সুদিন তো এলো না, কেউ তো সাহায্য করতে এগোলোন, তখন সারা জগতটাকে বজ্জাত বেঈমান বলতে বলতে ভুল প্রশান্তি খুঁজি।
নিজের জীবনের দায় নিজের কাঁধে না নিয়ে কাউকে বা কোনো অতীত, ব্যক্তি, পরিবার-পরিবেশকে অভিযুক্ত করতে থাকার মানে জীবনকে আরো পিছনের দিকে ঠেলতে থাকা। আর হতাশায় তলিয়ে যাওয়া।
অতএব, মানসিক প্রশান্তির জন্য করণীয়:
★ সমস্যা চিহ্নিত করুন ও তা থেকে উত্তরণের জন্য যথাসাধ্য সচেষ্ট হোন।
★ যে পরিবেশের মধ্যে বসবাস, তা আপনার মানসিক অনুকূল না হলে অনুকূলে আনার চেষ্টা করুন অথবা পরিবর্তন করতে হবে।
★ জীবনের একটি লক্ষ্য থাকতে হয়। কী করবেন, কী হতে চান ভবিষ্যতে, কতোটুকু যেতে চান? এসবের ছক আঁকুন। তাতে মনোযোগ দিলে, কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করতে থাকলে সেটাই হয়ে উঠবে মনের প্রশান্তির মহা ঔষধ।
★ অবসর সময়ে একটু ভিন্ন পরিবেশ থেকে ঘুরে আসা উচিৎ। কারণ ভ্রমণ করলে মন ফ্রেশ থাকে।
#kazisharif#Copyrrahman#kazisharif95
